গাজীপুরের শিল্পনগরী টঙ্গীতে প্রায় ছয় শতাধিক কারখানা রয়েছে।
এসব কারখানায় প্রায় ৫-৬ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। তাদের
স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে শ্রম অধিদপ্তরের অধীনে স্থানীয় মিলগেটে
স্থাপিত হয় ‘টঙ্গী শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র। কেন্দ্রের ভবনের দেয়ালে ও
ছাদে ফাটল ধরে ব্যবহার অনুপযোগী হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণার
২১ বছর পরও নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি। উন্নয়নের অভাবে
একদিকে যেমন বর্তমানে ভাড়া করা ভবনে চলছে এর কার্যক্রম
অপরদিকে কেন্দ্রের প্রাঙ্গণটি হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারী, মাদকসেবী
ও নেশা বিক্রেতাদের আড্ডাখানায়। তাই শ্রমিকদের কল্যানার্থে ও
সুষ্ঠু পরিবেশের লক্ষ্যে শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের ভবন নির্মাণে সংশ্লিষ্ট
দপ্তরের দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।
শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র সূত্রে জানা
গেছে, ১৯৬৪ সালে ০.৮২ একর জমির ওপরে নির্মিত হয় টঙ্গীর
শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে টঙ্গী ও তৎসংলগ্ন শিল্প
কারখানার শ্রমিক ও তাদের পরিবারের বিনামূল্যে চিকিৎসা
সেবাসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটি কাজ করে আসছে।
ছিনতাইকারী ও মাদক
সেবীদের আড্ডাখানা
সিনেমা থেকে দূরে
সরছেন মাহিয়া মাহী!
নেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম প্যাথলজিক্যাল ল্যাব ও
রোগীদের বসার ব্যবস্থা। সরেজমিন শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র ঘুরে জানা
যায়, জরাজীর্ণ একতলা ভবন। দরজা-জানালা নেই। দেয়ালে ও
ছাদে ফাটল ধরে ভবন তৈরিতে ব্যবহৃত রড বের হয়ে আছে।
কোথাও কোথাও দেয়ালের ইট ধসে পড়েছে। ভবনের প্রাঙ্গণের
ঝোপঝাড় পরিষ্কার না করায় উৎপত্তি হচ্ছে এডিস মশা। সন্ধ্যা
হলেই ভবন প্রাঙ্গণে ও ভেতরে বসে এলাকার ছিনতাইকারী,
উচ্ছৃঙ্খল, বখাটে ও মাদকসেবীদের আসর। রাতের বেলায় এর
ভেতরে হয়ে থাকে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ। স্থানীয় বাসিন্দা লতিফ
মিয়া জানান, ‘সন্ধ্যার পর মাদকসেবীরা ভবনটির ভেতরে মাদক
সেবন করে। ভবনটি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে হওয়ায়
ছিনতাইকারীরা ছিনতাইয়ের আগে ও পরে এখানে অবস্থান নেয়।’
কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা গার্ড ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী মিঠুন বাঁশফোর
জানান, রাত হলেই ছিনতাইকারী, মাদকসেবী ও নেশা
বিক্রেতাদের আড্ডাখানায় পরিণত হয় এই স্থানটি। বেড়া দিলেও
তা ভেঙে ভেতরে ঢুকে বখাটে লোকজন। বাধা দিলে মারধর
করতে উদ্যত হয় এবং বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দেয়।
টঙ্গীর শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ডা.
ফেরদৌস আক্তার বলেন, ‘ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় একটি
ভাড়া করা ভবনে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। পুরাতন ভবনটি
ভেঙে পুনর্নির্মাণ করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সূত্রে জেনেছি।
তবে কবে নাগাদ এর নির্মাণ কাজ শুরু হবে তা জানি না। আশা
করছি দ্রুতই নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।’