টঙ্গী (গাজীপুর)প্রতিনিধি:
গাজীপুরের টঙ্গীতে বিএনপি’র এক নেতাকে সালাম না দেয়ায় মুন্না খান (২২) নামে এক যুবককে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারধরের শিকার যুবক টঙ্গী পশ্চিম থানায় অভিযোগ করতে গেলে উল্টো সেই যুবককেই বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের ঘটনার মামলায় সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে টঙ্গীর সাতাইশ চৌরাস্তা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকার যুবক মুন্না খান টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন সাতাইশ চৌরাস্তা এলাকার আজমত খানের ছেলে। অভিযুক্ত বিএনপি’র নেতা সাত্তার হোসেন টঙ্গী পশ্চিম থানাধীন ৫১ নং ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি। জানা যায়, আহত অবস্থা মুন্নার পরিবার তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলে থানার উপস্থিত গনমাধ্যম কর্মীদের সামনে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসকান্দার হাবিব তাকে চিকিৎসা শেষে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। মুন্না ও তার পরিবারে সেই পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শেষ রাত ১০টার দিকে পূনরায় থানার ডিউটি অফিসার কক্ষে লিখিত অভিযোগ নিয়ে যায়। এসময় অভিযুক্তরা তারা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কক্ষে অবস্থানরত ছিলেন।
অভিযোগ দাখিল এর সময় ওসির কক্ষে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় ভুক্তভোগীকে। সেই কক্ষে ওসিকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে তোলা মুন্নার কিছু ছবি প্রদর্শন করে অভিযুক্তরা উচ্চবাচ্য করেন ও তেরে আসেন বলে তারা। এই ঘটনা চলাকালীন সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ভূমিকা ছিলো নিরব দর্শক। রাতে তাকে আটক দেখিয়ে মঙ্গলবার সকালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরবর্তী সময় দায়ের করা একটি মামলার অজ্ঞাত আসামীর তালিকায় তার নাম যুক্ত করে জেল হাজতে পাঠানো হয়। ভুক্তভোগী মুন্নার দাবী, রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ডেকে নিয়ে সালাম না দেওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেন সাত্তার হোসেন। একপর্যায়ে তাকে চড়, থাপ্পড় মারা শুরু করে পরে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেয়।
মুন্নার মা মিনেরা বেগম বলেন, রাস্তা দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় সাত্তার আমার ছেলে মুন্নাকে ডেকে নিয়ে নিছক কারণেই এলোপাতাড়ি মারধর করে। পরে মারধরের কারণ জানতে চাইলে সাত্তারের হুকুমে খোকন, জিলনসহ অজ্ঞাত আরোও কয়েকজন আমাকে ও আমার স্বামীকেও মারধর করেছে। পরে আমরা টঙ্গী পশ্চিম থানায় অভিযোগ করতে আসার পর পুলিশ আমার ছেলেকেই রাজনৈতিক মামলায় আটক করে। কিন্তু আমার ছেলে রাজনীতি করে না আর তার কোনো পদ পদবি নাই। আমি পুলিশ আর বিএনপি নেতার সুষ্ঠু বিচার চাই। তবে ঘটনা অস্বীকার করেন অভিযুক্ত বিএনপি নেতা সাত্তার বলেন, এমন কোন ঘটনাই ঘটেনি। মুন্না থানায় যাওয়ার পরে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাশকতার মামলায় আসামি হিসেবে মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।