গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের ঐতিহাসিক বরমী ১০ শয্যা বিশিষ্ট মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিত্যক্ত ভবন এখন ময়লার ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে। প্রতিনিয়তই এলাকার কিছু অসচেতন ব্যক্তি এবং দোকানদাররা সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলছে। এতে ময়লা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, যা আশপাশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ভয়াবহ হুমকি হয়ে উঠেছে।এলাকার অন্যতম ধর্মীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বরমী হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্ররা জানায়, যখন বাতাস বইতে থাকে তখন পচা দুর্গন্ধ শ্রেণিকক্ষে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে কুরআন পাঠে অসুবিধা হয়। এমনকি দুর্গন্ধে মাঝে মাঝে কেউ কেউ জ্ঞান হারায়। স্থানীয় হুজুররা এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।একাধিক এলাকাবাসী জানান, তারা বরং বরমী ইউনিয়ন পরিষদের নির্ধারিত স্থানে ময়লা ফেলেন, কিন্তু হাসপাতালের পরিত্যক্ত ভবনে নয়। একজন স্থানীয় বাসিন্দা দাবি করেন, একটি ফ্লাটের ভাড়াটিয়ারা নিয়মিতভাবে ময়লা ফেলে যাচ্ছেন সেখানে, যদিও অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।অবশেষে সাংবাদিকদের মাধ্যমে বিষয়টি বরমী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রতন মিয়ার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আমাকে আগে কেউ বিষয়টি জানায়নি, সাংবাদিকদের মাধ্যমে অবগত হয়েছি। আমি শুধু হাসপাতাল চত্বর নয়, আশপাশের বাজার এলাকার সব ময়লাও পরিষ্কার করিয়ে দিচ্ছি। বরমীর মানুষ যেমন পরিচ্ছন্ন, পরিবেশও তেমন পরিচ্ছন্ন দেখতে চাই।”এদিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা বিষয়টি শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তাকে জানিয়েছে, কিন্তু এখনো কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএস শফিক জানান, “আমি খুব দ্রুত বরমী মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবেশের উন্নয়নে ব্যবস্থা নেবো।”বিশ্লেষণ ও আহ্বান: একটি হাসপাতাল এলাকার পরিবেশ যদি অপরিচ্ছন্ন থাকে, তবে তা রোগীদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে। রোগ জীবাণু সহজেই ছড়ায়, শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়। পাশাপাশি পাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ে।এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান থাকবে—ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন, নিজেরা সচেতন হোন এবং অন্যদের সচেতন করুন। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেন অবহেলা না করে দায়িত্ব পালনে সক্রিয় হয়—এটাই প্রত্যাশা।রতন চেয়ারম্যানের তাৎক্ষণিক উদ্যোগ এলাকাবাসীর কাছে প্রশংসিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও এমন দায়িত্বশীল পদক্ষেপই পারে বরমীকে পরিচ্ছন্ন ও নিরাপদ করে তুলতে।
স্টাক রিপোর্টার মোফাজ্জল হোসেন