শীলমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জুলহাস ভূইয়া বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে শীলমান্দী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে দাপটের সাথে রাজত্ব করেছেন। স্থানীয় জনগণ বলেন জুলহাস ভূইয়া পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌরসভার মেয়র ও পলাশ উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মুজাহিদ হোসেন তুষারের প্রভাবে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে রাম রাজত্ব করতেন। মেয়র তুষারের বন্ধু পরিচয়ে তিনি ইউনিয়ন পরিষদে বহাল তবিয়তে থেকে বিভিন্ন প্রকল্প, আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ (মাস্টারের) সাথে আতআত করে রাস্তাঘাট ইত্যাদির কাজ ভাগিয়ে নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। নরসিংদী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল ও পলাশ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কামরুল আশরাফ খান পোটনের সন্ত্রাসী বাহিনীদ্বারা জোর পূর্বক আওয়ামীলীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী গিয়াসউদ্দিন আহমেদ মাস্টার কে নির্বাচনে মাঠে উপস্থিত থেকে পাশ করিয়েছেন। বিগত আওয়ামীলীগের আমলে শীলমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের তিন তিন বারের নির্বাচিত ইউপি সদস্য ও বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেলিনা বেগম কে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বিএনপির তকমা দিয়ে প্রবেশ করতে দিতেন না চেয়ারম্যানের লাঠিয়াল বাহিনি, পেছনে তার ইন্দনদাতা ছিলেন জুলহাস ভূইয়া। সেলিনা আক্তার কে দিতেন না বসার জায়গা। গত ২১’শে এপ্রিল রোজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে সেলিনা আক্তার নরসিংদীবাসী কে জানান আমি বিগত সরকারের আমলে এই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কারণে পরিষদে আসতে পারিনি, কোনো মিটিং বা জরুরি নাগরিক সেবামূলক কোনো সভায় আমাকে ডুকতে দেওয়া হয়নি। আমি বিএনপির লোক বলে আমার সাথে বৈষম্য করেছে। বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা জুলহাস ভূইয়া বহাল তবিয়তে থেকেও ইউনিয়ন পরিষদ কার্যবিধি মোতাবেক ইউপি সদস্য উপস্থিত রাখতে কোনো কথা বলেন নি, তাকে বাদদিয়ে সকল সভা ও কার্যক্রম চালিয়ে গেছেন। আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে সরাসরি নৌকা মার্কার জনসভা ও উঠান বৈঠকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা জুলহাস ভূইয়া সরাসরি উপস্থিত থেকে নৌকার পক্ষে প্রচার প্রচারণা চালিয়েছেন ও ভোট চেয়েছেন। যা সরকারি চাকুরীবিধি অনুযায়ী সম্পূর্ণ নিয়মনীতি বহির্ভূত।
উক্ত জুলহাস ভূইয়া তৎকালীন স্থানীয় সরকার বিভাগ নরসিংদী’র উপসচিব (ডিডিএলজি) রেজাউর রহমানের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ও আওয়ামীলীগের দাপট খাটিয়ে কিছু সংখ্যক সচিব কে ভালো ভালো স্টেশনে বদলীর প্রলোভনে এবং কিছু সংখ্যক সচিবকে রায়পুরার চরে বদলী করে দিবেন মর্মে হুমকি দিয়ে বিনা ভোটে নরসিংদী জেলা সচিব সমিতির সভাপতি হয়েছিলেন। যা ২০২৪ সালে জুলাই পট পরিবর্তনের পরে সাধারণ সচিবদের তোপের মুখে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জেলা কমিটি ভেঙে দিয়ে সভাপতির পদ ছাড়তে বাধ্য হয়। তৎকালীন সময়ে (ডিডিএলজি) রেজাউর রহমানের সাথে মিলে জুলহাস নিজে এবং তার একনিষ্ঠ কয়েকজন এক বছরের মধ্যে পর পর ৩-৪বার সুবিধাজনক স্টেশনে বদলী হয়। তার বিরুদ্ধে সচিব বদলী বানিজ্যেরও ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। সাধারণ সচিবদের প্রশ্ন এত কিছুর পরেও জুলহাস প্রশাসনের নাকের ডগায় এখনও বহাল তবিয়তে রাজত্ব করেছে কিভাবে? তার খুটির জোড় কোথায় প্রশ্ন স্থানীয় জনগণের। শীলমান্দী ইউনিয়নের শেখেরচর বাজারে সাবেক চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন এর ছেলের যোগসাজসে অবৈধ ট্রেড লাইসেন্স বিক্রয়ের বিষয়েও অভিযোগ রয়েছে শিলমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান প্রশাসনিক কর্মকর্তা জুলহাস ভূইয়া।
গত ৫’ই আগস্টের পর সারা বাংলাদেশে সকল দপ্তরে, বিভিন্ন অফিস আদালতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বদলি ও পরিবর্তন হলেও এখনো বহাল তবিয়তে রয়েছেন জুলহাস ভূইয়া। ২০২৪ সালের ৫’ই আগস্ট কোটা বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর শিলমান্দী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ ছাত্র হত্যা মামলার দায়ে পলাতক, পালানোর পর স্থানীয় প্রশাসন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে সেলিনা আক্তার কে দায়িত্ব প্রদান করেন। জুলহাস ভূইয়া এবারো সুযোগ সন্ধানের সাথে থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেলিনা আক্তারের সাথে ভারসাম্য করে বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদে তার রাজত্ব চালিয়ে যাওয়ার পায়তারায় চলছেন। জনগণের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নাগরিক সেবার অন্যতম প্লাটফর্ম হচ্ছে বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ। এই সকল কার্যালয়ে শিশু জন্মের পর জন্ম নিবন্ধন, মৃত্যুর পর মৃত্যু নিবন্ধন, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি, টিসিবি, বিভিন্ন ভাতা ও সরকারি প্রকল্প সহ নানা প্রকার জনকল্যাণমূলক নাগরিক সেবা রয়েছে। জানাযায় প্রায় ২০-২৫টি নাগরিক সেবা নিতে প্রতিদিন নাগরিকরা উপরোক্ত কার্যালয় গুলোতে যায়। জনগণ উপরোক্ত কার্যালয় গুলো থেকে সরাসরি সেবা পেয়ে থাকেন। তবে শীলমান্দি ইউনিয়ন পরিষদে বিগত সময়ে সেবার নামে নানা জালিয়াতি ও অনিয়ম হয়েছে। এ বিষয়ে নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত স্থানীয় জনগণ ও শীলমান্দি ইউনিয়ন বাসী এই প্রশাসনিক কর্মকর্তার অপসারণ সহ বিগত সময়ে আওয়ামীলীগের সাথে থেকে যারা অপকর্মে লিপ্ত ছিল সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন, সেই সাথে জুলহাস ভূইয়ার অপসারণ চেয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ হোসেন চৌধুরী ও উপসচিব স্থানীয় সরকার বিভাগ মৌসুমী সরকার রাখির সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
নরসিংদী প্রতিনিধি: