মান্দায় এলজিইডির কার্য-সহকারীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ।

নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর মান্দায় এলজিইডি’র কার্য-সহকারী আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বুনে গেছেন এমন অভিযোগ অভিযোগ উঠেছে। এতে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে এলাকাজুড়ে। অফিস সূত্রে জানা যায়, নওগাঁয় ২০০১ সালে হতে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ১১২ টাকা দিন হাজিরায় চুক্তিভিত্তিক এলজিডি’র ল্যাব সহকারী পদে কর্মরত ছেলে। পরবর্তীতে রাজস্ব খাতে স্থায়ীকরণের মাধ্যমে কার্য -সহকারী পদে ৯ হাজার ৩ শত টাকা বেতন স্কেলে চাকরি করে আসছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ কিভাবে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছে তিনি এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের। এ যেনো কাল্পনিক গল্পকথার আলাদিনের চেরাগ পেয়ে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার মত অবস্থা। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে,নওগাঁ শহরে (এলজিইডি অফিসের পাশে) প্লট কিনে তাতে গড়ে তুলেছেন প্রায় কোটি টাকা মূল্যের বহুতল বিশিষ্ট আলিশান ফ্ল্যাট, সদর ইউনিয়নের বুনিয়াপাড়ায় রয়েছে আরও একটি সীমানা প্রাচীর বেষ্টিত জমির প্লট, নিজ এলাকায় রয়েছে জমিসহ মার্কেট, চলাচলের জন্য একাধিক বিলাশবহুল গাড়ি, এছাড়াও নওগাঁর নিয়ামতপুরে কর্মরত থাকাবস্থায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা এক স্বামী পরিত্যক্ত নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করার পর সেই স্ত্রীর নামে-বেনামে করেছেন বহু সম্পদ। এছাড়াও উপজেলার ঠাকুর মান্দা বাজারে সবুজ বাংলা কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতির শেয়ার পার্টনার বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠজনরা। এছাড়াও ওই এনজিও এক কর্মকর্তার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি জানিয়েছেন রশিদ স্যার এই এনজিওতে শেয়ার পাটনার হিসেবে যুক্ত আছেন। এছাড়াও সুরমা মাল্টিপারপাস নামে একটি এনজিওতে প্রায় পৌনে ১ কোটি টাকা জামানত রেখেছিলেন বর্তমানে সেই এনজিও লাপাত্তা হয়ে গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনজিও এর এক কর্মী জানান এখানে আব্দুর রশিদ স্যার টাকা জমা রেখেছিলেন কিন্তু এনজিওটি পালিয়ে যাওয়ার কারণে ধরা খেয়েছেন তিনি। আব্দুর রশিদ কার্যসহকারী পদে ১৬ তম গ্রেডে চাকরি করলেও তার এলাকায় তিনি পরিচয় দেন ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। অফিসে বসেন উপজেলা সহকারী প্রকৌশলীর ডেস্কের চেয়ারে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক জানান, নওগাঁ জেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডির) এর ল্যাব সহকারী পদে চাকুরী করার সুবাদে সখ্যতা গড়ে ওঠে বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে। আওয়ামী দুঃশাসনের আমলে প্রভাব প্রতিপত্তি খাঁটিয়ে পছন্দের ঠিকাদার কে কাজ পাইয়ে দেওয়া, নিম্নমানের কাজ মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে ল্যাব টেস্ট পার করে দেওয়া, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে শেয়ারে কাজ করা, বদলি- তদবির ও ঘুষ বাণিজ্যসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আব্দুর রশিদের চাচাতো ভাই দুলাল জানান, তার অন্য ভাইদের অবস্থা তেমন ভালো না কিন্তু আব্দুর রশিদ ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি পাওয়ার পরে মার্কেট বাড়ি গাড়ি অনেক কিছুই করেছেন। রশিদ স্যার মাঝে মধ্যে প্রাইভেটকার নিয়ে এলাকায় আসেন।
আব্দুর রশিদ উপজেলার কশব ইউপি’র কসব- ভোলাগাড়ি গ্রামের খোয়াজ মাঝির ছেলে। স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, জমাজমি বলতে তেমন কিছু নেই তার বাবার। বসত ভিটে ছাড়া কোন কৃষি জমি নেই বললেই চলে। তার অন্য ৩ ভাইয়ের মধ্যে ২ জন রিক্সা চালিয়ে সংসার পরিচালনা করেন। অপর আরেক ভাই প্রবাস ফেরত তিনি বর্তমানে বাড়িতে অবস্থান করেছেন। আব্দুর রশিদ গত ২০১৩ সালে রাজস্ব খাতে ১৬ তম গ্রেডে তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারী হিসেবে এলজিইডিতে যোগদান করেন তিনি। নিয়ামতপুরের এক ঠিকাদার জানান, তিনি পূর্বে নিয়ামতপুরে কর্মরত ছিলেন সেখানে রয়েছে তার বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ। বর্তমানে তিনি মান্দা উপজেলা এলজিইডিতে কার্যসহকারী হিসেবে কর্মরত আছেন। মান্দা উপজেলা এলজিইডি’র কার্য-সহকারী আব্দুর রশিদ বলেন, ছোট পদে চাকুরী করার পরেও আমি একটু ভালো খাবার খাই, ভালো পোশাক-আশাক পড়ি এবং ভালো বাড়িতে বসবাস করি এটা কারো সহ্য হয়না। চাকুরীর সুবাদে অনেক আগে ২০১৪ সালে নওগাঁ শহরে জমি কিনে বাড়িটি নির্মাণ করা। প্লটটিও অনেক কম দামে কেনা। আর গাড়িটি নিজের ছিলো না, এক অফিসারের গাড়ি তিনি ব্যবহার করতেন। সেটি বিক্রি করে দিয়েছেন। নিজ এলাকায় মার্কেট নির্মাণ করার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। তবে, এনজিওর শেয়ার পার্টনার এবং পৌনে এক কোটি টাকা আমানত রাখার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। তার দাবি যে,একটি কু-চক্রী মহল তার প্রতি ঈর্শ্বান্বীত হয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব প্রপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটি’র কোষাধ্যক্ষ কমরেড ডাঃ এসএম ফজলুর রহমান বলেন, শুধু আব্দুর রশিদসহ যারা অবৈধভাবে এসব অর্থ সম্পদ গড়ে তুলেছে। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সেই সাথে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার আহব্বান জানান তিনি।

     More News Of This Category

Our Like Page

পুরাতন খবর

MonTueWedThuFriSatSun
      1
2345678
23242526272829
3031     
    123
       
 123456
28293031   
       
      1
2345678
30      
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
28293031   
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31