লালপুরে গত ৩ বছরে প্রকল্প লোপাট,দুঃস্থদের নলকূপ বিত্তবানের ঘরে

নাটোর প্রতিনিধিঃ
নাটোরের লালপুরে সুপেয় পানির সংকট থাকায় চাহিদা মেটাতে বিগত ৩ বছরে
হত দরিদ্রদের সহয়তা করতে প্রায় কোটি টাকার প্রকল্প দিয়েছে সরকার। তবে এসব
প্রকল্প স্থানীয় কর্মকর্তাদের যোগসাজশে লোপাট করেছে জন প্রতিনিধিরা।
এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলা প্রকৌশল অফিসের অধীনে ২০২১-২০২৪
তিন অর্থ বছরে দুঃস্থদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণের নলকূপ, গভীর নলকূপ ও
সাবমারসিবল পাম্প স্থাপন করা হয়েছে বিত্তবান ও সচ্ছলদের বাড়িতে। এসব
সুবিধাভোগীরাও দলীয়, স্বজনপ্রীতি ও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ
পেয়েছেন।
এছাড়া ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বিভিন্ন ইউনিয়নে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে
বিনামূল্যে হস্তচালিত নলকূপ সরবরাহের দুইটি প্রকল্প গায়েব করার তথ্য পাওয়া
গেছে। প্রকল্প দুইটির সভাপতি ছিলেন সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান
মনোয়ার হোসেন মনি ও সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান লাবণী সুলতানা।
এ বিষয়ে লাবণী সুলতানা বলেন, আমি অসুস্থ থাকায় আগেই স্বাক্ষর করেছিলাম।
পরে প্রকল্পের কাজ পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান করেছিল। আমি কিছুই জানি না।
আমাকে শুধু নামে সভাপতি করা হয়েছিলো।
আর মনোয়ার হোসেন মনি দায় চাপালেন সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম
বকুলের ওপর। তিনি বলেন, আমরা ছিলাম বলির পাঠা। আমাদের থেকে জোর করে
প্রকল্পগুলো সাবেক এমপি বকুল নিয়ে নিয়েছিল। আমাদের মাধ্যমে কিছুই দেওয়া হয়নি। এবিষয়ে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের বক্তব্য
পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ আছে, নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে পাম্প স্থাপন হলেও অনেকে পানির ট্যাংক
পান নি আর অধিকাংশ পাকাকরণের কাজ বাস্তবায়ন হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও
দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে কাগজে-কলমে কাজ বাস্তবায়ন
দেখিয়ে প্রকল্পের টাকা লুটপাট করেছে।
সরেজমিনে জানা গেছে, উপজেলার নেঙ্গপাড়া গ্রামে আব্দুল হান্নান ও মহেশপুর
গ্রামের চাম্পা বেগম, দুইজনই সচ্ছল। তারা ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে দুস্থ পরিবারের
মাঝে বিতরণের সাবমারসিবল পাম্প পেয়েছেন৷ তবে তারা পানির ট্যাংকি পান নি,
হয়নি পাঁকাকরণও। তারা মাসের পর মাস অফিসে ঘুরেও সমাধান পাচ্ছেন না।
উপজেলার মাঝগ্রামের রেজাউল করিম, তার নামে গভীর নলকূপ বরাদ্দ হলেও তিনি পান
নি। একই ঘটনা মোহরকয়া গ্রামের জামাল উদ্দিন খান্দারের ক্ষেত্রেও। এছাড়া
পাটিকাবাড়ি গ্রামে মজিবর রহমান এবি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর
সাত্তারকে ৭ হাজার টাকা দিয়ে সাবমারসিবল নিয়েছে। এছাড়া এসব প্রকল্পের

যারা সুবিধাভোগী তারা প্রায় প্রত্যেকেই ৭/১০ হাজার টাকার বিনিময়ে বরাদ্দ
পেয়েছেন।
এবিষয়ে জেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর
রহমান টুটুল বলেন, বিগত সময়ে অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে
জনপ্রতিনিধিরা ব্যাপক অনিয়ম-দূর্নীতিতে জড়িয়েছে পড়েছিল। গণঅভ্যুত্থান পর
দূর্নীতিকে জিরো টলারেন্সে আনতে যারা বিভিন্ন সময়ে লুটপাট করেছে তাদের
তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আওতায় আনতে হবে। সর্বক্ষেত্রে দূর্নীতি প্রতিরোধ করা
সম্ভব হলেই সোনার বাংলা গড়ে উঠবে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাজেদুল ইসলাম বলেন, আমি জুলাই মাসে এখানে
যোগদান করেছি। তার আগে কি হয়েছে সেটা উপ-সহকারী প্রকৌশলীরা বলতে
পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, অভিযোগ পেলে
বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

     More News Of This Category

Our Like Page

পুরাতন খবর

MonTueWedThuFriSatSun
      1
2345678
23242526272829
3031     
    123
       
 123456
28293031   
       
      1
2345678
30      
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
293031    
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
28293031   
       
     12
3456789
10111213141516
17181920212223
24252627282930
31