৫২, ৬৯, ৭১ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তে রঞ্জিত বাংলাদেশে জাতীয় বেঈমান, মুনাফেক, লুটেরা, সুযোগ সন্ধানী আমলা দুর্বৃত্ত, ব্যবসায়িক দুর্বৃত্ত, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের রক্ষার আপোষ-মিমাংসা জনগণ মেনে নেবে না—সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী১৯ জুন শনিবার পান্থপথ সেল সেন্টার মিলনায়তনে দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমন্বয় কমিটির মতবিনিময় সভায় সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী বলেছেন, ৫২, ৬৯, ৭১ ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তে রঞ্জিত বাংলাদেশে জাতীয় বেঈমান, মুনাফেক, লুটেরা, সুযোগ সন্ধানী আমলা দুর্বৃত্ত, ব্যবসায়িক দুর্বৃত্ত, রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের রক্ষার আপোষ-মিমাংসা জনগণ মেনে নেবে না।দুর্নীতি বিরোধী জাতীয় সমম্বয় কমিটির ১১ দফা সুপারিশ বাস্তবায়ন ছাড়া স্হানীয় ও জাতীয় নির্চাবন বাংলাদেশের ৮৭% জনগণ মানবে না।বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এবং ঢাকার সাবেক জেলা ও দায়রা জজ মোঃ রফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক মন্ত্রী নাজিমুদ্দিন আল আজাদ, সাবেক বিচারপতি ড. মোঃ আবু তারিক, সাবেক বিচারপতি ইমদাদুল হক আজাদ, সাবেক আন্তর্জাতিক বিচারক ড. মোঃ শাহজাহান সাজু, কাইয়ুম রেজা চৌধুরী, রিহাবের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল, কর্নেল (অবঃ) ড. প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মোঃ শামছুদ্দিন, কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামস এ খান, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আসাদের সহোদর ড. আজিজুল্লাহ এম নুরুজ্জামান নূর, উইং কমান্ডার (অবঃ) মীর আমিনুল ইসলাম, মহান মুক্তিযুদ্ধের গেরিলা কমান্ডার ড. এস এম শফিকুল ইসলাম কানু, ড. প্রকৌশলী লুৎফর রহমান, পারভীন নাসের খান ভাসানী, নাগরিক ভাবনার আহ্বায়ক মোঃ হাবিবুর রহমান, সাবেক রাষ্ট্রদূত ড. প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, সেতারা রেজভী লাকী প্রমুখ।দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে মানব সৃষ্টির মহান উদ্দেশ্য প্রতিপালনে বাবা আদম ও মা হাওয়া (আঃ) থেকে সৃষ্ট সকল ধর্মের অনুশাসন–“দেশপ্রেম ইমানের অঙ্গ” “দেশকে গড়তে হলে, সবার আগে নিজকে গড়ো” “নিজকে শুদ্ধ করি, দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ি” “দুর্নীতি নিজে করবোনা, কাউকে দুর্নীতি করতে দিবোনা” পরকালীন মুক্তির জন্য দেশের এই ক্রান্তিকালে নিজ পরিবার, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, পরিচিত সকল দুর্নীতিবাজদের চরম ঘৃণা প্রদর্শন, দুর্নীতিবাজদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করা প্রতিটি মানুষের ঈমানী দায়িত্ব।সবার আগে দেশ। মজলুম জনগণের একমাত্র আশা-আকাঙ্ক্ষা দুর্নীতিমুক্ত বিশ্বমানের বাংলাদেশ গড়ে তোলা। অন্তরায় হচ্ছে দ্বিধা-দ্বন্দ, বিভক্তি-বিভ্রান্তি, অপব্যাখ্যা-অপপ্রচার, পারস্পরিক কাঁদা ছোড়াছুঁড়ি ও দলীয় কোন্দল, জেদ-অহংকার, হিংসা-বিদ্বেষ।বেঈমানী আমাদের ঈমানের নূরকে ম্লান করে দিয়েছে। স্বার্থপরতা মানবজাতির নিকৃষ্টতম অপরাধ।লোভ, মোহ, স্বার্থ, আত্মপ্রীতি, স্বজনপ্রীতি, আত্মগরিমা, আত্মগৌরব, আত্মঅহংকার, প্রভৃতি রোগে অধিকাংশ মানুষ আক্রান্ত। সমস্ত শরীরে পঁচন ধরেছে, যার দুর্গন্ধ গোটা সমাজ ও রাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ছে।সংস্কার বিরোধীগণ নিজ দল সংস্কারে চরমভাবে পর্যুদস্ত। বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ও ভয়াবহ পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক বিভিন্ন শ্রেণী পেশার দায়িত্বশীল দেশপ্রেমিকদের বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলা। বারবার জীবন দিয়ে স্বৈরশাসক পরিবর্তন করার চেয়ে পুরো শাসন ব্যবস্হার সংস্কার করা অধিক শ্রেয়। এমনভাবে সংস্কার ও পরিবর্তন করতে হবে যাতে স্বৈরশাসক তৈরি হতে না পারে।মাত্র ১৩% জাতীয় বেঈমান, সুযোগ সন্ধানী, দালাল, চাটুকার, লুটেরা, মাফিয়া-সিন্ডিকেট, অন্ধ দলদাস, চাঁন্দাবাজ, ধান্দাবাজ, দুর্বৃত্তদের থেকে দেশ বাঁচাতে ৮৭% মজলুম জনগণকে দুর্নীতিমুক্ত বিশ্বমানের বাংলাদেশ গড়তে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য জরুরি।চিরদিনের জন্য স্বৈরশাসকমুক্ত নৈতিক মানবিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতির মুক্তির অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার নিকট সংগঠণের পক্ষ থেকে জাতির মুক্তি সনদ ১১ দফা পুনরায় পেশ করেন।
১. দুর্নীতিবাজদের কঠোর শাস্তির বিধান কার্যকর করা।
২. সরকার পদ্ধতি ও রাজনৈতিক দলের সংস্কার কার্যকর করা।
৩. আইন ও বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন কার্যকর করা।
৪. শিক্ষা ব্যবস্থার টেকসই উন্নয়নের জন্য জাতীয় শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন কার্যকর করা।
৫. সংবিধান সংশোধন ও সংস্কার।
৬. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্তকরণ।
৭. সম্পূর্ণ স্বাধীন দুর্নীতি দমন ও প্রবীণ কল্যাণ মন্ত্রণালয় গঠন কার্যকর করা।
৮. ভোটার ক্লাবের মাধ্যমে সম্পূর্ণ প্রশাসনমুক্ত স্বচ্ছ ভোটাধিকার প্রয়োগের পদ্ধতিসহ স্বাধীন নির্বাচন কমিশন সংস্কার ও পুনর্গঠন কার্যকর করা।
৯. স্বাধীন পাবলিক সার্ভিস কমিশন সংস্কার ও পূর্নগঠন কার্যকর করা।
১০. রাষ্ট্রীয় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ দুর্নীতিমুক্ত করাসহ ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইকে সংস্কার ও বিশ্বমানের গঠন।
১১. গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও পত্রিকা মাফিক-সিন্ডিকেটমুক্ত করে সৎ সাহসী, সত্যবাদী, দায়িত্বশীল ও নিবেদিত দেশপ্রেমিক গণমাধ্যম কর্মীদের নিকট হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক অনুসন্ধানী সাংবাদিকগণের সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।