গত ৫ই আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে বাংলাদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বাংলাদেশ উন্মক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) ক্যাম্পাসেও বিশৃঙ্খলা চরমে উঠেছে। বিশেষ করে, সিএসই বিভাগের ওরিয়েন্টেশন ও ক্লাস স্থগিত হওয়ার পর থেকে ক্যাম্পাসে নানা দাবি-দাওয়া নিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের শুরুতে তারা যৌক্তিক দাবী পেশ করলেও, একদল সুযোগসন্ধানী শিক্ষার্থী, যার মাঝে বাউবির ফুড এন্ড নিউট্রিশন, এলএলবি, ও সিএসই প্রোগ্রামের কতিপয় শিক্ষার্থী রয়েছে; তারা সরকার পতন এবং প্রশাসন পরিবর্তনের সুযোগ কে কাজে লাগিয়ে তাদের অযৌক্তিক দাবি নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু করে। উল্লেখ্য, সিএসই প্রোগ্রামের ৯০ শতাংশের ও বেশী শিক্ষার্থী এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত নয় এবং কোনোভাবে তাদের সমর্থন ও করেনা।
উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে দূরবর্তী শিখন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে এই শিক্ষার্থীরা মূল ক্যাম্পাসে ক্লাস ও পরীক্ষা এবং হল সেবা চাওয়া শুরু করে। সে লক্ষ্যে তারা বাউবির ভেতর একটা পুরাতন অফিস ভবন অবৈধভাবে দখল করে সেখানে বসবাস শুরু করে, যা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত। তারা স্বেচ্ছাচার শুরু করে, তাদের মতের বিরুদ্ধে যাওয়া সকল কর্মচারী-কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করে। প্রশাসনের কতিপয় লোকের ছত্রছায়ায় তারা এখনো তাদের কার্যক্রম চলমান রেখেছে। তাদের এই অবৈধ কর্মকাণ্ড এবং অযৌক্তিক দাবির কারণে সিএসই প্রোগ্রাম সহ কতিপয় প্রোগ্রামের পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত হয়ে যায়। সে সাথে বাউবির সকল শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। সাধারন শিক্ষার্থীরা শিক্ষা কার্যক্রম সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজে বাউবি ক্যাম্পাসে গেলেও উক্ত সুবিধাবাদি দলের আক্রমনাত্মক অবস্থার মুখোমুখি হয়।
ক্লাস ও পরীক্ষা পুনরায় শুরু করার জন্য শিক্ষকদের সাথে কথা বলেও কোনো ফল পায়নি। উল্টো, কতিপয় শিক্ষার্থীর অযৌক্তিক দাবি নিয়ে আরো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। এরই প্রেক্ষিতে ১৪ ই নভেম্বর এই উক্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের প্রধান ফটক আটকে দিয়ে তাদের দাবি আদায়ের চেষ্টা করে। অন্যান্য শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা তাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে অনিশ্চিত এবং প্রশাসনের কাছে দাবি জানায় যাতে বাউবির সকল শিক্ষা কার্যক্রম পূর্বের মতো স্ব স্ব স্টাডি সেন্টারে বহাল রাখা হোক। তবে বাউবি প্রশাসন এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি।
এই আন্দোলনের কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। প্রশ্ন উঠছে, বাউবি প্রশাসন এই বিশৃঙ্খলা নিরসনে এবং শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করবে?