চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি:
চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার রামদিয়া গ্রামে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে আহমেদ শরীফ ওরফে ছোট বুড়ো (৪৫) নামের এক কৃষককে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। রবিবার (২২ ডিসেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামের মাঝেরপাড়া এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। নিহত শরীফ ওরফে বুড়ো রামদিয়া গ্রামের মৃত বিশারত আলীর ছেলে। এ সময় আরও ৪জন গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়াও প্রতিপক্ষেরও ক’একজন আহত হয়েছে বলেও জানা গেছে। আহতরা হলেন- একই গ্রামের ইদ্রিস আলীর ছেলে আব্দুল আলিম (৪০), সেলিম (৫৫) ও সেলিমের ছেলে সোয়েব (৩৩), এবং পল্টু আহম্মেদ।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ইউনিয়নের রামদিয়া গ্রামের আনসার আলী ও ফরিদ জোয়ার্দ্দার গ্রুপের সাথে একই গ্রামের পল্টু ও হালিম গ্রুপের দীর্ঘদিন ধরে জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধ চলছিল। আনছার আলী গ্রুপ বিএনপি এবং পল্টু ও হালিম গ্রুপের লোকজন স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগ রাজনীতির সাথে জড়িত। গত ৫ আগস্ট দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর ৬ আগস্ট থেকে আনছার আলী গ্রুপের লোকজন এলাকায় মহড়া দিতে থাকে। বেশ কিছুদিন ধরে পল্টু ও হালিম গ্রুপের সাথে আনছার আলী গ্রুপের কয়েক দফা হামলা পাল্টা হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর পল্টু-হালিম গ্রুপের লোকজন বাড়ি ছাড়া ছিল। এরই এক পর্যায়ে রবিবার সন্ধ্যায় আহ্ম্মদ শরীফ ওরফে ছোট বুড়োসহ ক’এক জনকে মাঝেরপাড়ার মসজিদের সামনে পেয়ে প্রতিপক্ষ আনসার জোয়ার্দ্দার গংয়ের লোকজন অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে শরীফ ওরফে ছোট বুড়োকে হত্যা করে। এ সময় তাদের পক্ষের পল্টু, আলিম, সেলিম ও সোয়েব আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
নিহতের বেয়াই আওলাদ হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আনছার আলী ও ফরিদ জোয়ার্দ্দার গং আমাদের উপর অত্যাচার চালিয়ে আসছে। গত ৬ আগস্ট মাঠে কাজ করা অবস্থায় আনছার আলী গ্রুপের লোকজন হালিমকে মারধর করে। পরদিন গ্রামের পল্টুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এভাবে সাথে দফায় হামলার কারণে আমাদের লোকজন বাড়ি ছাড়া ছিলাম। রবিবার এশার নামাজের পর আমার বিয়াই আহ্ম্মদ শরীফসহ ক’একজনকে মসজিদের সামনে পেয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আরও ৪ জনকে কুপিয়ে গুরতর আহত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মাসুদুর রহমান বলেন, রামদিয়ায় দু’পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ চলে আসছিল। রবিবার এশার নামাজের পর মাঝেররপাড়া মসজিদের সামনে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে একপক্ষের একজন নিহত ও ৩/৪ জন আহত হয়েছে। এসময় প্রতিপক্ষেরও ক’একজন আহত হয়েছে বলে শুনেছি। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে। আসামী ধরতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চুয়ডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।